বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৪ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর নগরের গ্যাসের সংকটে দেখা গেছে । সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারকারীরা বাসা-হোটেলে রান্নার সুযোগ পেলেও বেকায়দায় পড়েছেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর বিপুল গ্রাহকরা। চট্টগ্রামে মোট গ্রাহক ও সংযোগ আছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি।এর মধ্যে গৃহস্থালি সংযোগ ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১টি। চট্টগ্রামে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যায় ২৭০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সিলিন্ডার গ্যাস ছাড়াও অনেকে বিকল্প হিসেবে ইলেকট্রিক, কেরোসিন ও লাকড়ির চুলা ব্যবহার করেন।
ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ১৭৮ টাকা হলেও বর্তমান গ্যাস সংকটে অসাধু ব্যবসায়ীরা দেড় হাজার টাকা দাবি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে রোববার (১৪ মে) নগরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে দেখা গেছে খাবারের জন্য গ্রাহকদের লম্বা লাইন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও মিলছে না খাবার। হোটেল-রেস্টুরেন্টে চলছে খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি। বিভিন্ন স্থানে ঘটছে হাতাহাতি-মারামারিও। অনেকে পাঠাও, সহজ ফুড, ফুড প্যাক ও ফুডপান্ডা অ্যাপস এর মাধ্যমে রেস্টুরেন্ট বা হোমমেড খাবার অর্ডার করছেন।চট্টগ্রামে গত ১০ বছরে গড়ে উঠেছে ৫ শতাধিক রেস্টুরেন্ট। এছাড়া প্রায় ৪শ হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগর এর তথ্যমতে, নগরীতে এই সংগঠনের তালিকাভুক্ত ২৬১টি খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর বাইরে আছে আরও ১৫০টি রেস্তোরাঁ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মহানগর এবং বিভিন্ন উপজেলায় রেস্টুরেন্ট এর লাইসেন্স নিয়েছে ২৬৪টি, এর অধিকাংশই চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার।নগরের কে সি দে রোড, এসএস খালেদ রোড, অলংকার মোড়, ওয়াসা মোড়, আলকরণ মোড়, পাহাড়তলী কলেজ রোড, চকবাজার, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এলাকা, আগ্রাবাদ সহ বিভিন্ন স্থানে খবর নিয়ে জানা গেছে, গ্যাস সংকটের কারণে রেস্তোরাঁগুলো থেকে গ্রাহকদের চাহিদামতো খাবার সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকরা দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেও না খাবার পেয়ে , হোটেলের সামনে হাতাহাতিতে জড়ানোর খবর পাওয়া গেছে।এমনই খাবার নিতে আসা এক নারী ফিরে আসার সময় অভিযোগ করে বলেন, ১০ মিনিট পর দেওয়ার কথা বললেও এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তিন প্যাকেট চিকেন বিরিয়ানি পাইনি। উল্টো অন্য গ্রাহকরা দুর্ব্যবহার করেছেন। ক্যাফে কর্ণফুলীর হোটেল ম্যানেজার সাগর বলেন, সিলিন্ডার গ্যাসের দামও বেড়েছে। গ্রাহকদের কাছে পর্যাপ্ত রান্না করা খাবার সরবরাহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১৯ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস সংকট থাকবে। বর্তমানে রিজার্ভ থেকে নিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। রিজার্ভে সাধারণত থাকে ৮০ থেকে ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।